November 21, 2024, 8:39 pm
দৈনিক কুষ্টিয়া অনলাইন/
স্বাস্থ্যখাতে কমিউনিটি পর্যায়ে প্রায় ১৪ হাজার অস্থায়ী পদ সৃষ্টির অনুমোদন দিতে চলেছে অন্তর্র্বতী সরকার। সরকারের দুটি কর্তৃপক্ষ কমিউনিটি স্বাস্থ্যসেবায় ১৯ হাজার ৩৮৮টি পদ সৃষ্টির বিষয়ে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের অনুরোধে সাড়া দেওয়ার পর এই প্রস্তাব আসে।
স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড. শেখ আব্দুর রশিদের সভাপতিত্বে প্রশাসনিক উন্নয়ন সংক্রান্ত সচিব কমিটির বৈঠকে প্রস্তাবটি পর্যালোচনার জন্য নির্ধারিত রয়েছে।
অর্থ বিভাগ (বাস্তবায়ন) ইতোমধ্যে ১৩ হাজার ৯৪৯টি পদের জন্য বেতন স্কেলের রূপরেখাও নির্ধারণ করেছে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ও অর্থ বিভাগ কমিউনিটি ক্লিনিক হেলথ সাপোর্ট ট্রাস্টের সাংগঠনিক কাঠামোর মধ্যে অস্থায়ী ভিত্তিতে এই পদ সৃষ্টি করতে সম্মত হয়েছে।
কমিউনিটি ক্লিনিক হলো সরকারের স্বাস্থ্যসেবা কাঠামোর সবচেয়ে তৃণমূল পর্যায়। এখান থেকে স্বাস্থ্য, পরিবার পরিকল্পনা ও পুষ্টি বিষয়ক সেবা দেওয়া হয়। মানুষ এসব ক্লিনিক থেকে বিনামূল্যে ৩০ ধরনের ওষুধ পান।
১৯৯৬ সালে তৎকালীন আওয়ামীলীগ সরকার আমলে গ্রামীণ দরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষের মানসম্মত প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপনের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। মূলত জনগণের অংশগ্রহণে গ্রামীণ মানুষের দোরগোড়ায় প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরিচর্যা পৌঁছে দেওয়াই ছিল লক্ষ্য।
১৯৯৮-২০০১ সময়ে ১০০০০ এর অধিক কমিউনিটি ক্লিনিক নির্মিত ও অধিকাংশই চালু করা হয় এবং জনগণ সেবা পেতে শুরু করে। কিন্তু ২০০১ সালে সরকার পরিবর্তনের পর এ কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায় এবং এ অবস্থা ২০০৮ সাল অবধি চলমান থাকে। দীর্ঘদিন অব্যবহৃত থাকায় নদীভাংগন ও অন্যান্য কারণে ৯৯টি কমিউনিটি ক্লিনিক ধ্বংস হয়ে যায় এবং ১০৬২৪টি বিদ্যমান থাকে। পরবর্তীতে ২০০৯ সাল হতে কমিউনিটি ক্লিনিক পুনঃরুজ্জীবিতকরণ কার্যক্রম শুরু হয়। এ কার্যক্রমের মাধ্যমে ১৯৯৮-২০০১ সময়ে নির্মিত কমিউনিটি ক্লিনিকগুলির প্রয়োজনীয় মেরামত, জনবল পদায়ন, ঔষধ ও প্রয়োজনীয় সামগ্রী সরবরাহ পূর্বক এবং নতুন নির্মিত কমিউনিটি ক্লিনিক পর্যায়ক্রমে চালু করা হয়। এটি ২০১৫ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত অব্যাহত থাকে।
কমিউনিটি ক্লিনিক হেলথ সাপোর্ট ট্রাস্টের চেয়ারম্যান ডা. আবু মো. জাকির হোসেন বলেন, বিশ্বের যে কয়েকটি দেশ বিভিন্ন স্বাস্থ্য সুবিধার মাধ্যমে কমিউনিটি পর্যায়ে জনগণকে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা দেওয়ার চেষ্টা করছে, তার মধ্যে বাংলাদেশও রয়েছে।
প্রায় ১৪ হাজার নতুন পদ সৃষ্টির বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এই পদগুলো বর্তমানে উন্নয়ন বাজেটের আওতায় রয়েছে। এগুলোকে রাজস্ব বাজেটের আওতায় অস্থায়ী ভিত্তিতে তৈরি করা হচ্ছে।’
কমিউনিটি ক্লিনিক হেলথ সাপোর্ট ট্রাস্টের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘বর্তমানে সারা দেশে প্রায় ১৫ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক রয়েছে। এর মধ্যে সাড়ে আট হাজার মেরামত করা দরকার।’
এই ক্লিনিকগুলো শুক্রবার ও অন্যান্য সরকারি ছুটির দিন ছাড়া সপ্তাহে ছয়দিন সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত খোলা থাকে। কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডাররা (সিএইচসিপি) ক্লিনিকগুলো পরিচালনা করেন। তাকে এ কাজে সহযোগিতা করেন একজন স্বাস্থ্য সহকারী ও একজন পরিবার কল্যাণ সহকারী।
Leave a Reply